নারায়ণগঞ্জে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে ভোগান্তি

Passenger Voice    |    ১১:৩৯ এএম, ২০২২-১১-০৭


নারায়ণগঞ্জে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে ভোগান্তি

নারায়ণগঞ্জে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে ভোগান্তির চিত্র নতুন কিছু নয়। দীর্ঘদিন ধরে এমন পরিস্থিতি চলে আসছে। ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য বিআরটিএ কার্যালয়ের সামনে নিত্যদিন ভোগান্তির চিত্র দেখা যায়। চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদনকারীদের মধ্যে। এদিকে নারায়ণগঞ্জের নবাগত পুলিশ সুপার বলেছেন কিছুদিনের মধ্যে মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে। যেসব মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নেই, কাগজপত্র আছে তারা রেজিস্ট্রেশন করে ফেলেন। কিন্তু যাদের কোনোটিই নেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতে প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জ বিআরটিএ কার্যালয়ে ভিড় করছেন যানবাহন মালিকরা। বিশেষ করে মোটরসাইকেলচালকদের ভিড় লক্ষণীয়।

গ্রাহকদের অভিযোগ, বিআরটিএ লাইসেন্সের জন্য ২০১৯ সালে যারা আবেদন করেছেন তাদেরকে কর্তৃপক্ষ ধরিয়ে দিয়েছেন একটি স্লিপ। যা দিয়ে চালাতে পারবেন গাড়ি। এখন সেই স্লিপই হয়রানির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের। স্লিপ দেখানোর পরও মামলা দিচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে গাড়িপ্রতি গুণতে হচ্ছে পাঁচশ থেকে হাজার টাকার জরিমানা। এদিকে স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে, আবেদন থেকে শুরু করে লাইসেন্স হাতে পাওয়া পর্যন্ত পদে পদে ভোগান্তি। বছরের পর বছর ঘুরেও লাইসেন্স না পেয়ে দালাল ধরতে বাধ্য হচ্ছেন সেবাপ্রত্যাশীরা। বিআরটিএ বলছে, কার্ডসংকটের কারণেই এমন পরিস্থিতি। খবর ইত্তেফাক

ক্ষোভ প্রকাশ করে লাইসেন্সের আবেদনকারী রাজু আহম্মেদ বলেন, আমি ২০২০ সালে আবেদন করি, এখন পর্যন্ত লাইন্সেস কার্ড হাতে পাইনি। তাদের কাছে এলে বার বার সময় দিয়েও কার্ড দিতে পারেনি। রাজু আহম্মেদের মতো অনেকেই দীর্ঘদিন ধরেই তাদের লাইসেন্স পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন। অপরদিকে অনেক দিন পর লাইসেন্স পেয়ে খুশি আবেদনকারী সুলতান আহমেদ। তিনি লাইসেন্স পেয়ে বলেন, লাইসেন্স তো পেলাম না যেন সোনার হরিণ পেলাম। তিন বছর পর লাইসেন্স পাওয়া তো সোনার হরিণ পাওয়ার মতোই। এই কার্ডের জন্য তাদের কাছে যে কতবার গিয়েছি। তার ভাষ্যমতে, এখানে হাজার হাজার আবেদনকারী এখনো তাদের লাইসেন্স পায়নি। নামমাত্র কিছুসংখ্যক লোক পেয়েছেন।

অন্যদিক নাজমুল হাসান নামের এক যুবক বেকারত্ব ঘোচাতে গাড়ি চালনা পেশা হিসেবে নিতে ড্রাইভিং শেখেন। কিন্তু চাকরি পেতে লাগবে লাইসেন্স। সেই আশায় আবেদনও করেছেন। দুই বছর পেরিয়ে গেলেও মেলেনি লাইসেন্স। চাকরি কিংবা লাইসেন্স দুটোই অনিশ্চিত তার। নাজমুল হাসানের মতো অনেক লাইসেন্স প্রার্থী আছেন এমন অনিশ্চয়তায়। জাল ড্রাইভিং লাইসেন্সের ব্যবহার ঠেকাতে ২০১১ সাল থেকে ইলেকট্রনিক চিপযুক্ত ডিজিটাল লাইসেন্স ব্যবস্থা চালু করে বিআরটিএ। ঘরে বসেই অনলাইনে আবেদন করার ব্যবস্থা রাখা হয়। লার্নার কার্ড পাওয়ার পর লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর মেলার কথা লাইসেন্স। অথচ সহজ এই পথটাই যেন আজ কঠিন। প্রতিটা ক্ষেত্রেই দীর্ঘ সময়ক্ষেপণে আবেদনকারীরা পড়েছেন ভোগান্তিতে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) নারায়ণগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পরিচালক ইঞ্জি. মো শামসুল কবীর জানান, ৫ হাজারের মতো আবেদনকারী ড্রাইভিং লাইসেন্স এখনো পায়নি। আমাদের ব্যান্ডর ছিল না, তাই প্রিন্ট করা যায়নি। ফলে আবেদনকারীদের লাইসেন্স পেতে দেরি হয়েছে। আশা করছি, ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই আবেদনকারীদের লাইসেন্স চলে আসবে। এবং সঙ্গে সঙ্গে তারা পেয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে নতুন লাইসেন্সের আবেদনকারীরা এক মাসের মধ্যেই তাদের লাইসেন্স পেয়ে যায়। তাদের মোবাইলে এসএমএস চলে আসার চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে কার্ড হাতে পেয়ে যায়।

 

প্যা.ভ/ত